পারমাণবিক যুদ্ধ থেকে ‘বিশ্বকে’ রক্ষা করেছিলেন যিনি
স্তানিস্লাভ পেত্রভের জীবনের অসাধারণ গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে দ্য ম্যান হু সেভড দ্য ওয়ার্ল্ড (বিশ্বকে রক্ষাকারী মানুষ)।
১৯৮৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর। পেত্রভ রাশিয়ার আগাম পারমাণবিক সতর্কীকরণ কেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন। ওই দিন বেঁধে যেত পারত পারমাণবিক যুদ্ধ। ওই সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রগুলো পরস্পরের দিকে ছিল তাক করা। তিনি খেয়াল করে দেখলেন, সতর্কীকরণ কেন্দ্রের কম্পিউটারগুলো মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র এগিয়ে আসছে বলে ভুল নির্দেশনা দিচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরের দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে ফোন করে জানান যে, কম্পিউটারের সিস্টেমে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। তাঁর ওই সিদ্ধান্তই সম্ভবত বিশ্বকে একটি পারমাণবিক যুদ্ধ থেকে রক্ষা করেছে। ঘটনার কয়েক বছর পর এ তথ্য প্রকাশিত হয়।
১৯৮৩ সালের ওই দিনের ঘটনার বর্ণনা ২০১৩ সালে বিবিসির রাশিয়ান সার্ভিসকে দিয়েছেন স্তানিস্লাভ পেত্রভ। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে ওই সময় একটি তথ্য আসল (ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ হতে চলেছে)। আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ব্যাপারটি জানালাম। কেউ এ ব্যাপারে একটি টু শব্দও করল না।’
যাই হোক, পেত্রভ এটিকে কম্পিউটারের ভুল নির্দেশনা হিসেবে সন্দেহ করেন। বিবিসিকে স্তানিস্লাভ পেত্রভ আরও বলেন, ‘আমি যা করতে চেয়েছিলাম তা ছিল দ্রুত ফোনের কাছে পৌঁছানো। যাতে করে আমাদের শীর্ষ কমান্ডারদের কাছে সরাসরি লাইনে কথা বলতে পারি। কিন্তু আমি যেখানে ছিলাম সেখান থেকে সরতে পারলাম না। ওই সময় আমার মনে হলো যে, আমি জ্বলন্ত কড়াইয়ে বসে আছি।’
ওই সময়ের কর্তব্যরত কর্মকর্তা (ডিউটি অফিসার) স্তানিস্লাভ পেত্রভ কম্পিউটারের ভুল নির্দেশনার ব্যাপারে সোভিয়েত সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরকে জানানোর সিদ্ধান্ত নেন। যুদ্ধ থেকে বিশ্বকে বাঁচানো পেত্রভ বলেন, ‘২৩ মিনিট পরে আমি বুজতে পারলাম যে, আসলে কিছুই ঘটছে না। যদি এটি বাস্তবে ঘটার মতো ঘটনা হতো তাহলে আমি ইতিমধ্যেই তা সম্পর্কে জানতে পারতাম। এটি আমার জন্য স্বস্তির ব্যাপার ছিল।’
তবে পেত্রভের এ সিদ্ধান্তের জন্য প্রশংসার বদলে জুটেছিল তিরস্কার।
পরে জানা যায় যে, এ মিথ্যা সতর্কতাগুলো সূর্যালোকের প্রতিফলিত একটি ব্যাপার দ্বারা সৃষ্টি হয়েছিল। যাতে মনে হচ্ছিল, মিসাইল আক্রমণ হতে যাচ্ছে।
স্তানিস্লাভ পেত্রভের এ গল্প ১৯৯৮ সালে প্রকাশিত হয়। এই সময় তিনি তার ১৯৮৩ কর্মের জন্য ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছিলেন। এরপরেই নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ওয়ার্ল্ড সিটিজেন অ্যাসোসিয়েশন ‘পারমাণবিক যুদ্ধ এড়ানো মানুষ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে পেত্রভকে পুরস্কৃত করা হয়।
পেত্রভ সোভিয়েত সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসেবে অবসর নেন।
পেত্রভ ১৯ মে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর কাছের একটি ছোট্ট শহরে নিজ বাড়িতে মারা যান। তথ্যসূত্র: এএফপি ও ইনডিপেনডেন্ট
Source:www.prothom-alo.com/international/article/1327861/পারমাণবিক-যুদ্ধ-থেকে-‘বিশ্বকে’-রক্ষা-করেছিলেন-যিনি
ওই সময়ের কর্তব্যরত কর্মকর্তা (ডিউটি অফিসার) স্তানিস্লাভ পেত্রভ কম্পিউটারের ভুল নির্দেশনার ব্যাপারে সোভিয়েত সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরকে জানানোর সিদ্ধান্ত নেন। যুদ্ধ থেকে বিশ্বকে বাঁচানো পেত্রভ বলেন, ‘২৩ মিনিট পরে আমি বুজতে পারলাম যে, আসলে কিছুই ঘটছে না। যদি এটি বাস্তবে ঘটার মতো ঘটনা হতো তাহলে আমি ইতিমধ্যেই তা সম্পর্কে জানতে পারতাম। এটি আমার জন্য স্বস্তির ব্যাপার ছিল।’
পরে জানা যায় যে, এ মিথ্যা সতর্কতাগুলো সূর্যালোকের প্রতিফলিত একটি ব্যাপার দ্বারা সৃষ্টি হয়েছিল। যাতে মনে হচ্ছিল, মিসাইল আক্রমণ হতে যাচ্ছে।
স্তানিস্লাভ পেত্রভের এ গল্প ১৯৯৮ সালে প্রকাশিত হয়। এই সময় তিনি তার ১৯৮৩ কর্মের জন্য ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছিলেন। এরপরেই নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ওয়ার্ল্ড সিটিজেন অ্যাসোসিয়েশন ‘পারমাণবিক যুদ্ধ এড়ানো মানুষ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে পেত্রভকে পুরস্কৃত করা হয়।
পেত্রভ সোভিয়েত সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসেবে অবসর নেন।
পেত্রভ ১৯ মে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর কাছের একটি ছোট্ট শহরে নিজ বাড়িতে মারা যান। তথ্যসূত্র: এএফপি ও ইনডিপেনডেন্ট
Source:www.prothom-alo.com/international/article/1327861/পারমাণবিক-যুদ্ধ-থেকে-‘বিশ্বকে’-রক্ষা-করেছিলেন-যিনি
Post a Comment