Header Ads

test

গণহত্যায় দোষী সাব্যস্ত মিয়ানমার সরকার

গণহত্যায় দোষী সাব্যস্ত মিয়ানমার সরকার

আন্তর্জাতিক গণ-আদালতের রায়

গণহত্যায় দোষী সাব্যস্ত মিয়ানমার সরকার

আবুল কাশেম ও আরিফুজ্জামান তুহিন 
রোহিঙ্গা গণহত্যা, ধর্ষণ, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে মিয়ানমার সরকারকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন মালয়েশিয়ার আন্তর্জাতিক গণ-আদালত। গত ১৮ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারে রোহিঙ্গা, কাচিনসহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর দেশটির সেনাবাহিনী, পুলিশ ও সরকার পরিচালিত গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী, বিশেষজ্ঞ সাক্ষ্য, বিভিন্ন প্রামাণ্য দলিলের ভিত্তিতে ইতালির রোমভিত্তিক সংস্থা পারমানেন্ট পিপলস ট্রাইব্যুনাল (পিপিটি) গতকাল শুক্রবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করে বলেছেন, মিয়ানমার সরকারের ওপর জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে।
ট্রাইব্যুনালের সভাপতি আর্জেন্টিনার সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের প্রতিষ্ঠাতা দানিয়েল ফিয়েরেস্তেইন রায় ঘোষণা করে বলেন, ‘মিয়ানমারের শাসকগোষ্ঠী গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। ’
গণ-আদালত বলেছেন, ‘উপস্থাপিত সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে মিয়ানমার রাষ্ট্র কাচিন ও অন্যান্য মুসলিম গ্রুপের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। এ ছাড়া মিয়ানমার রাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের ওপরও গণহত্যা চালিয়েছে। উপরন্তু রোহিঙ্গাদের ওপর এখন যে গণহত্যা চলছে এবং তাতে যে হারে প্রাণহানি ঘটছে, এখনই তা বন্ধের পদক্ষেপ নেওয়া না হলে এটি ভবিষ্যতে আরো বাড়তে পারে। ’
মালয়েশিয়ার মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ মিলনায়তনে পিপিটির সাতজন বিচারক ৩১ পৃষ্ঠার রায় ভাগ করে পড়েন। রায়ের অপারেটিভ বা কার্যকর অংশ পাঠ করেন অস্ট্রেলীয় বিচারক জিল এইচ বোয়েরিঙ্গার। এ রায়ে ১৭টি সুপারিশ করা হয়েছে। এতে মিয়ানমারের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিদেশে থাকা ব্যাংক হিসাব বাজেয়াপ্ত, গণহত্যায় যুক্ত ব্যক্তিদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করার কথা বলা হয়েছে। এসব নিষেধাজ্ঞা ও শাস্তি নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ, আসিয়ানসহ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণ-আদালত।
পিপিটির ওয়েবসাইটে থাকা ৩১ পৃষ্ঠার রায় পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিভিন্ন দেশের যুদ্ধাপরাধ তদন্তে যুক্ত আইনবিদ, স্বনামধন্য মানবাধিকারকর্মী ও বিশেষজ্ঞরা এ বিচার কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। প্রতীকী এই গণ-আদালতের রায়ের আইনি বাধ্যবাধকতা না থাকলেও এই রায় সারা দুনিয়ায় মিয়ানমারের বিপক্ষে মতামত তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পিপিটির দেওয়া রায়ে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তা সারা বিশ্বের যুদ্ধবিরোধী মানুষকে মিয়ানমারের গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার করবে।
১৯৯২ সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের গণ-আদালতে বিচারের পথ ধরেই বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার সম্ভব হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের পাশাপাশি ফ্রান্স, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের চালানো বর্বরতাকে গণহত্যা বলে অভিহিত করেছে। তাই এখন বা ভবিষ্যতে মিয়ানমার সরকার ও দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা করার ক্ষেত্রে এই রায় তাত্পর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, গণ-আদালতের এই রায় মিয়ানমারের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে। কারণ এই আদালতে বিশ্বের নামিদামি আইনজীবী ও বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন। তাঁরা গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ পেয়ে দেশটির সরকারকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন।
তিনি বলেন, তুরস্ক ও ফ্রান্স এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছে যে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চলছে। তাই দেশটির বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ নিয়ে যাঁরা এখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার কথা ভাবছেন, তাঁদের জন্য এই রায় বড় সহায়ক হবে। এ ছাড়া রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ যে অবস্থান নিয়েছে, এই রায় সেই অবস্থানের সপক্ষে বড় প্রমাণ হিসেবেও আন্তর্জাতিক মহলে বিবেচিত হবে।
বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক পিপিটির শুনানিতে অংশ নেন। তিনি চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র ঘুরে দেখার অভিজ্ঞতা গণ-আদালতে তুলে ধরেন।
গতকাল কালের কণ্ঠকে রিয়াজুল হক বলেন, এই রায়ের আইনি ভিত্তি না থাকলেও মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা সহজ হবে। দেশটিতে যে গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে, এই রায়ের মাধ্যমে তা প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ প্রমাণ করা সহজ হবে।
গণ-আদালতের সুপারিশ তুলে ধরে পিপিটির বিচারক অধ্যাপক বোয়েরিঙ্গার বলেন, বিচারে উঠে আসা সব তথ্য-প্রমাণ, রায় ও সুপারিশ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠানো হবে, যাতে তারা মিয়ানমার সরকারকে চাপ দিতে পারে।
রায়ে ১৭টি সুপারিশ উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে : ১. মিয়ানমার সরকার ও আসিয়ান প্রতিনিধিরা রাখাইনের সব সশস্ত্র গ্রুপকে নিয়ে সেখানকার সীমান্ত বরাবর অঞ্চলের বেসামরিকীকরণ এবং একটি অস্ত্রবিরতির প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা শুরু করবে। ২. অং সান সু চি ঘোষিত ‘যাচাইকরণ প্রক্রিয়া’য় রোহিঙ্গাসহ সব গোষ্ঠীকে পূর্ণ নাগরিকত্ব দিতে হবে। ৩. জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থাকে রাখাইনের ঘটনা তদন্তের অনুমতি দিতে হবে। ৪. মিয়ানমারকে অবশ্যই রোহিঙ্গা, কাচিন ও অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের প্রতি তার বৈষম্যমূলক নীতি পরিহার করতে হবে। ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন বাতিলসহ ২০০৮ সালের সংবিধানে সংশোধনী আনতে হবে। ৫. মিয়ানমারের পার্লামেন্টে সামরিক প্রতিনিধির কোটা বাতিল করতে হবে। ৬. সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশকে পূর্ণ বেসামরিক নিয়ন্ত্রণে আনতে সংবিধানে নিশ্চয়তা থাকতে হবে। ৭. মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের দায়মুক্তি বন্ধ করে দোষীদের বিচার শুরু করতে হবে। ৮. বাস্তুচ্যুত ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন এবং তাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানে একটি স্বাধীন বেসরকারি কমিশন গঠন করতে হবে। ৯. একটি ফেডারেল কাঠামোর আওতায় বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী যাতে নিজেদের স্বায়ত্তশাসন নিজেরাই নিশ্চিত করার সামর্থ্য রাখে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।   ১০. মিয়ানমার ও তার প্রতিবেশী দেশগুলোকে মানবিক, মানবাধিকার, ধর্মীয় সংগঠন এবং সাংবাদিকদের রাখাইন প্রদেশ, রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুসহ কাচিন ও অন্য গোষ্ঠীগুলোর এলাকায় প্রবেশাধিকার দিতে হবে। ১১. উদ্বাস্তুপ্রবাহকে নিরাপত্তার চশমা দিয়ে দেখার একটি প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু সেটা শুধু ত্রুটিপূর্ণই নয়, এটা ভ্রান্ত নীতি অনুসরণে উৎসাহিত করতে পারে।
রায়ের এ পর্যায়ে বলা হয়েছে, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহতদের চিকিৎসাসহ রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী পরিচয়পত্র দেওয়ার আহ্বান জানাই। কারণ এটা তাদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার হওয়া থেকে সুরক্ষা দেবে। ১২. যে অভিবাসন সংকট দেখা দিয়েছে, তার দায়ভার আসিয়ান দেশগুলোকে নিতে হবে। আসিয়ান সনদ অনুযায়ী, রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের সীমান্ত খুলে দিতে হবে। উল্লেখ্য, মিয়ানমারসহ ১০টি দেশ আসিয়ানের সদস্য, বাংলাদেশ আসিয়ানের সদস্য নয়।
১৩. বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া এবং অন্যান্য জাতি যারা রোহিঙ্গাদের স্বাগত জানিয়েছে, তাদের আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা দিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও চীনের মতো সম্পদশালীদের এগিয়ে আসতে হবে। ১৪. স্বাগত জানানো দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। আবার একই সঙ্গে মানবপাচারকারীদের হাত থেকে তাদের বাঁচাতে যাতে সচেতনতা সৃষ্টি হয়, সে জন্য গণমাধ্যমকে উৎসাহিত করতে হবে  ১৫. মিয়ানমারের সরকারের ওপর আশু অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে। ১৬. মিয়ানমারের সরকারের কর্মকর্তাদের ওপর টার্গেটেড নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে এবং ১৭. এ রকম ঘটনার কারণ যা বিশ্বের জানা ছিল না, তা জানতে এবং সমস্যা চিহ্নিত করতে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বেসরকারি কমিশন গঠন করতে হবে।
পিপিটির বিচারক প্যানেলের সভাপতি ছিলেন দানিয়েল ফিয়েরেস্তেইন। অন্য বিচারকরা হলেন মালয়েশিয়ার জুলাইহা ইসমাইল, কম্বোডিয়ার আইনবিদ হেলেন জার্ভিস, অস্ট্রেলিয়ার সিডনির মেকুইয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক প্রধান জিল এইচ বোয়েরিঙ্গার, ইন্দোনেশিয়ার মানবাধিকার আইনজীবী নুরসিয়াবানি কাতজাসুংকানা, ইরানের মানবাধিকার আইনজীবী সাদি সদর ও ইতালির সুপ্রিম কোর্ট অব ক্যাসেসনের বর্তমান সলিসিটর জেনারেল নিলো রেসি।
পিপিটির কাছে মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে দেশটির সংখ্যালঘু জাতি নির্মূলের অভিযোগ আনে দুটি সংগঠন। মিয়ানমার রাষ্ট্রটি শুধু এখন নয়, সুদূর অতীতেও একই অপরাধ করেছে। এ বিষয়ে গঠিত পেনিগ্রিন, ফাহমি আবদ মঈন ও থমাস ম্যাকমানাস সমন্বয়ে গঠিত প্রসিকিউশন টিম ‘দ্য প্যানেল অব জাজেস অব দ্য পারমানেন্ট পিপলস ট্রাইব্যুনাল অন মিয়ানমার স্টেট ক্রাইমস অ্যাগেইনস্ট রোহিঙ্গা, কাচিন অ্যান্ড আদার গ্রুপ’-এর কাছে এ অভিযোগ করে কাচিন ও রোহিঙ্গাদের সংগঠন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পিপিটির ৪৩তম সেশনের প্রথম অধিবেশন ৬ ও ৭ মার্চ লন্ডনের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এবার মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া অধিবেশন গতকাল শেষ হয়।
গণ-আদালত মিয়ানমার সরকারের পাঁচজনকে তলব করেন। এঁরা হলেন দেশটির সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং, মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চি, চিফ মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড সিকিউরিটি অফিস অফ দ্য কমান্ডার ইন চিফ জেনারেল মে তুন উ, সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল ও সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান বর্তমানে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মিনত সুয়ে ও মিয়ানমারের মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান উইন মিরাকে। তবে আদালতের তলবে তাঁরা সাড়া দেননি, এমনকি নিজেদের কোনো প্রতিনিধিও পাঠাননি।
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের জাতিগত সংখ্যালঘু উল্লেখ করে আদালত বলেছেন, দশকের পর দশক ধরে মিয়ানমার তাদের অধিকার অস্বীকার করে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করছে। তাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও ইতিহাসকে অপরাধের চোখে দেখা হচ্ছে। শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বিভিন্ন আইন ও নীতি জারি করে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের সব ধরনের আইনি, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। সামরিক বাহিনীর অস্ত্রধারী সদস্যরা শিশুসহ নানা বয়সী রোহিঙ্গার ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। অনেককে গুম করে ফেলা হয়েছে। নারী ও শিশুদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। তাদের বিভিন্ন অঙ্গ কেটে ফেলা হচ্ছে। বিনা বিচারে হত্যা সেখানে সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি ভেঙে ও পুড়িয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে। এমন অনেক নজির রয়েছে যাতে প্রমাণ হয়, মিয়ানমার সরকার বা উগ্র জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী এসব কাজে সম্পৃক্ত।  
১৯৬২ সালে মিয়ানমারে সামরিক শাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়ন চলছে উল্লেখ করে গণ-আদালত বলেছেন, ৭০ বছর ধরে দেশটির সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী নির্মূলে কাজ করছে। ২০১২ সাল থেকে তা নতুন মাত্রা পেয়েছে। অথচ ১৮২৪ সালের বিভিন্ন নথিপত্রেও এটি স্পষ্ট যে তখন মিয়ানমারে বৌদ্ধ ও রোহিঙ্গাদের সমানাধিকার ছিল। এখন তাদের নাগরিকত্ব না দেওয়াটা পুরোপুরি অন্যায় উল্লেখ করে রায়ে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সংসদ, সামরিক বাহিনী, পুলিশ বাহিনী, প্রশাসন ও শিক্ষা খাতের কোথাও মুসলমানদের নিয়োগ দেওয়া হয় না। রায়ে আরো বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নির্মূল ও গণহত্যাই শুধু করা হয়নি, মিয়ানমার সরকার কাচিন জনগোষ্ঠীকেও ধীরে ধীরে নির্মূল করেছে।
Source: http://www.allbanglanewspaperlist24.com/newspapers.php?q=kalerkantho.com

No comments

Thanks for your valuable comment!