উ. কোরিয়া নিয়ে বিভক্তি শক্তিধর দেশগুলোর
জাপানের ওপর দিয়ে উত্তর কোরিয়া আবার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পর রাষ্ট্রটির লাগাম টেনে ধরতে করণীয় নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো। কয়েক দিন আগে উত্তর কোরিয়ার ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা নিয়ে একাট্টা হওয়া দেশগুলো এখন পিয়ংইয়ংকে নিয়ন্ত্রণে রাখার দায়দায়িত্ব নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করতে শুরু করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, উত্তর কোরিয়ার এ বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের জবাব দেওয়ার গুরুদায়িত্ব দেশটির প্রধান মিত্র চীন ও রাশিয়ার ওপরই বর্তানো উচিত। কিন্তু চীন বলছে, এ কথা বলে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের দায়দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে চাইছে। ওদিকে রাশিয়াও যুক্তরাষ্ট্রের ‘আগ্রাসী’ কথাবার্তার নিন্দা জানিয়েছে।
উত্তর কোরিয়া গত বৃহস্পতিবার ‘জাপানকে ডোবানো এবং যুক্তরাষ্ট্রকে ছাই করে দেওয়ার’ হুমকির পরদিনই জাপানের ওপর দিয়ে ফের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টার দিকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি উত্তর-পূর্ব জাপানের হোক্কাইডো প্রদেশের ওপর দিয়ে উড়ে গিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে পড়ে। এর আগে গত ২৯ আগস্ট ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রটিও জাপানের একই অঞ্চল দিয়ে উড়ে গিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে পড়েছিল। আগেরটির তুলনায় এবারের ক্ষেপণাস্ত্রটি আরো বেশি উচ্চতায় উঠেছিল এবং এটি উন্নত প্রযুক্তির ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ দক্ষিণ কোরিয়া এর তাত্ক্ষণিক জবাবে সাগরে দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের অনুরোধে শুক্রবারই জরুরি বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত জানায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।
উত্তর কোরিয়ার এ ধরনের বেপরোয়া কর্মকাণ্ড ‘কখনো মেনে নেওয়া হবে না’ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীনও উত্তর কোরিয়ার পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন পরিষ্কার করে বলেছেন, ‘ওয়াশিংটন মনে করে, পিয়ংইয়ংকে থামিয়ে রাখাটা এখন পেইচিং ও মস্কোর ওপরই নির্ভর করছে। তাদের অবশ্যই এ বেপরোয়া আচরণে অসহিষ্ণু মনোভাবের প্রকাশ ঘটাতে হবে এবং নিজ থেকেই এর বিরুদ্ধে সরাসরি ব্যবস্থা নিতে হবে। ’
দেশ দুটির ওপর দায় চাপিয়ে টিলারসন বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার বেশির ভাগ জ্বালানি তেলের জোগানদাতা চীন। আর দেশটির বেশির ভাগ শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে রাশিয়া। ’ কিন্তু চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিয়াং এর পাল্টা জবাবে সাংবাদিকদের বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ‘সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু’ নয় তাঁর দেশ। সংঘাতের সঙ্গে যারা সরাসরি সম্পৃক্ত তাদেরই সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব নিতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া নিয়ে স্পষ্ট মন্তব্যে চুনিয়াং বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তাদের হাত ধুয়ে ফেলার চেষ্টা দায়িত্বজ্ঞাহীনতা এবং সমস্যা সমাধানে অন্তরায়। ’ তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ সমস্যা সমাধানের কোনো পথ নয়, বরং আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক উপায়েই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব।
ওদিকে রাশিয়ার বেতার স্টেশনে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারভ বলেছেন, ‘আমরা কেবল উত্তর কোরিয়ার অবৈধ কর্মকাণ্ডে অসহিষ্ণুতাই দেখাচ্ছি না, বরং সমস্যা সমাধানের ইচ্ছাও দেখাচ্ছি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ওয়াশিংটন থেকে কেবল আগ্রাসী কথাবার্তাই আসছে। ’
সূত্র : বিডিনিউজ।
Source: http://mybangla24.com/kaler_kantho-_online_newspaper.php
Post a Comment