Header Ads

test

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য চীনা প্রস্তাব

জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের সাথে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের সাথে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
নয়া দিগন্ত অনলাইন
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭,মঙ্গলবার, ১৮:০৫

বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার সরকারের মধ্যে চলমান রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে সংলাপের কথা বলেছে চীন। পাশাপাশি মিয়ানমারের 'জাতীয় নিরাপত্তা বজায়' রাখা এবং যেকোনো 'সহিংস সন্ত্রাসী' হামলা ঠেকানোর ক্ষেত্রে দেশটির প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন জানাবে চীন।
জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠকে এ সব কথা বলেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। এ ছাড়া, রাখাইনে 'যুদ্ধের আগুন' দ্রুত নিভে যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন ওয়াং। এ ছাড়া, বাংলাদেশে যারা পালিয় গেছেন তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে ত্রাণ পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।
চীন নিজস্ব পথে শান্তি আলোচনা অব্যাহত রাখতে চায় বলে উল্লেখ করে ওয়াং বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি সহজ করতে এবং সংলাপ শুরুর বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে পারে।
রাখাইন প্রদেশে মিয়ানমারের সেনা অভিযানের জেরে চার লাখ ১০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মুসলমান প্রাণের ভয়ে বাংলাদেশে পালিয় গেছেন। এ ছাড়া, পালাতে যেয়ে অনেকে পানিতে ডুবে মর্মান্তিকভাবে মারা গেছে। মিয়ানমার সরকার দেশটিতে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে জাতিগত নির্মূল অভিযান চালাচ্ছে উল্লেখ করেছে জাতিসঙ্ঘ।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা চাইলেন সুকি
মিয়ানমার নেত্রী অং সান সু কি শরণার্থী সংকট বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ব্যাপকভাবে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।
রোহিঙ্গা সঙ্কট প্রশ্নে আগাগোড়াই নীরব থাকার পর অবশেষে প্রথমবারের মতো মুখ খুললেন তিনি। রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা তাদের বাড়ি ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হলেও এতোদিন এ প্রসঙ্গে কিছু না বলায় আন্তর্জাতিক মহলে তিনি তীব্রভাবে সমালোচিত হচ্ছিলেন।
এ অবস্থায় সুকি মঙ্গলবার রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন।
সুকি ৩০ মিনিটের টেলিভিশন ভাষণে তার সমালোচকদের উদ্দেশে বলেন, আজকের বিশ্বের অভিশাপ ঘৃণা ও আতংক।আমরা চাই না মিয়ানমার এমন একটি দেশ হোক যেটি হবে ধর্মীয় ও জাতিগতভাবে বিভাজিত।
সহিসংতার মুখে যারা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন তাদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করে সুকি বলেন, যাচাই বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে তার দেশ যে কোন সময়ই প্রস্তুত রয়েছে।
দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেত্রী সুকি পরিস্থিতি দেখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রাখাইন পরিদর্শনে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি আরো বলেন, আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নেও তার সরকার কাজ করবে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর ব্যাপক দমনপীড়ন শুরু হওয়ার পর শত শত লোকের প্রাণহানি এবং দেশটি থেকে চার লাখ ১০ হাজারের বেশী রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে প্রবেশ করে। জাতিসঙ্ঘ মিয়ানমারে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর এমন দমনপীড়নকে ‘জাতিগত নিধন’ বলে বর্ণনা করে।
এদিকে সু কি দেশের এ সংকট নিরসনের কথা বলে নিউইয়র্কে এ সপ্তাহের জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেয়া থেকে বিরত থাকেন।
শেখ হাসিনা-মাহমুদ আব্বাস বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু আলোচনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আজ এখানে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে আসা ফিলিস্তীনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বৈঠক করেন।
বৈঠকে দুই নেতা মিয়ানমারের সমস্যা এবং রোহিঙ্গা মুসলিম শরনার্থীদের বিষয়ে আলোচনা করেন।
আজ রাতে গ্রান্ড হায়াত হোটেলের নিজস্ব কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফিলিস্তীনের নেতার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, বৈঠকে মাহমুদ আব্বাস ফিলিস্তীনের সংকটের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিলিস্তীনের জনগণের পাশে থাকায় তাঁর অঙ্গীকার পুণর্ব্যক্ত করেন।
প্রেস সচিব বলেন, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, ‘এটি একটি দুর্যোগ। সর্বত্রই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মানবিক ভূমিকা প্রশংসিত হচ্ছে।’
শখ হাসিনা বলেন, একজন মানুষ হিসেবে প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু মানবিক গুনাবলী রয়েছে।
তিনি বলেন, অস্থায়ী ব্যবস্থাপনায় বর্তমানে বাংলাদেশে ৭ লাখ মিয়ানমারের শরনার্থী বসবাস করছে। যদিও মিয়ানমারকে তাদের এসব নাগরিকদের ফেরত নিয়ে যেতে হবে। এ জন্য বাংলাদেশ মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
রোহিঙ্গা শরনার্থীদের পুনর্বাসনে এ সময় বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ তৎপরতার কথাও প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ আব্বাসকে জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, একজন রিফিওজির দুঃখ, কষ্ট তিনি বোঝেন। কারণ, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তিনি এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা রিফিউজি হিসেবে ৬ বছর বিদেশে থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন।
আগত রোহিঙ্গা শরনার্থীদের পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য তার সরকার শরনার্থীদের রেজিষ্ট্রেশন করানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী এবং পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
Source:http://mybangla24.com/naya_diganta_bangla-newspaper.php

No comments

Thanks for your valuable comment!