Header Ads

test

কীভাবে অ্যামাজনকে ৫০ লক্ষ টাকা ঠকাল দিল্লির যুবক

ভারতে হায়দ্রাবাদের কাছে অ্যামাজনের একটি ফুলফিলমেন্ট সেন্টার
ভারতে হায়দ্রাবাদের কাছে অ্যামাজনের একটি 'ফুলফিলমেন্ট সেন্টার'
দিল্লির বাসিন্দা, একুশ বছর বয়সী শিবম চোপড়া ভারতে অ্যামাজন থেকে অনলাইনে মোট ১৬৬টি দামী মোবাইল ফোনে অর্ডার করেছিল। কিন্তু সেই ডেলিভারি হওয়া বাক্সগুলো খালি ছিল, এই দাবি করে অ্যামাজনের কাছ থেকে সে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় আধা কোটি টাকা।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, জালিয়াতির এই গোটা ঘটনাটা ঘটেছে এ বছরের এপ্রিল আর মে, মাত্র এই দুমাসের ভেতর।
তার পরেই অ্যামাজন বুঝতে পারে যে তাদের ধোঁকা দেওয়া হচ্ছে - এবং তারা তখন পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে।
দিল্লির উত্তরপ্রান্তে রোহিনী থেকে হোটেল ম্যানেজমেন্ট পাস করা শিবম চোপড়া কিছুদিন ছোটখাটো কিছু চাকরির চেষ্টা করলেও তেমন একটা সুবিধে করতে পারেনি। তারপর এ বছরের মার্চে তার মাথায় এই অ্যামাজনকে ঠকানোর বুদ্ধিটা আসে।
কিন্তু কী ছিল শিবম চোপড়ার অপরাধের ধরন বা 'মোডাস অপারেন্ডি'?
সে প্রথমে 'টেস্ট কেস' হিসেবে অ্যামাজন থেকে দুটো দামী ফোন অর্ডার দেয়। তারপর তাদের জানায় ডেলিভারি হওয়া বাক্সগুলোতে ফোন ছিল না, কাজেই টাকা ফেরত দেওয়া হোক। সেই টাকাও খুব সহজেই মিলে যায়।
এরপরই রীতিমতো আঁটঘাট বেঁধে সে পরের দুমাসে অ্যামাজন থেকে একের পর এক অ্যাপল, স্যামসুং বা ওয়ানপ্লাস ব্র্যান্ডের দামী মোবাইল ফোন অর্ডার দিতে শুরু করে।
কিন্তু এই অর্ডারগুলোর জন্য সে ব্যবহার করেছিল আলাদা আলাদা অ্যাকাউন্ট - আর প্রতিটি অ্যাকাউন্ট খুলতে সে স্থানীয় একজন মোবাইল ফোন দোকানদারের সাহায্য নিয়েছিল।
ওই দোকানদারই তাকে প্রায় দেড়শো-র মতো আগে থেকে অ্যাক্টিভেট করা মোবাইল সিমকার্ড সরবরাহ করে, আর সেগুলো দিয়ে সে খোলে অজস্র অ্যামাজন অ্যাকাউন্ট। ওই প্রতিটা সিমকার্ডের জন্য শিবম চোপড়া ওই দোকানিকে দেড়শো রুপি করে দিত।
তবে কোনও অর্ডারেই ওই যুবক নিজের সঠিক ঠিকানা ব্যবহার করেনি। সিমকার্ড দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে সে তার এলাকার কাছাকাছি কোনও ভুয়ো ঠিকানা দিত - আর ডেলিভারি বয় তার কাছাকাছি এসে যখন ঠিকানা খুঁজে পেত না, তখন সেই নম্বরে ফোন করত।


শিবম চোপড়া তখন যেখানে আছে, ডেলিভারি বয়কে ফোনে ডিরেকশন দিয়ে তার কাছাকাছি কোথাও আসতে বলে সেখানে ডেলিভারি নিত। পরে অ্যামাজনকে অভিযোগ করত যে বাক্সে কোনও ফোন ছিল না - এবং টাকা ফেরতও পেয়ে যেত।
গ্রাহকদের জন্য পার্সেল তৈরি করছে অ্যামাজন ইন্ডিয়া
গ্রাহকদের জন্য পার্সেল তৈরি করছে অ্যামাজন ইন্ডিয়া
আর অ্যামাজন থেকে পাওয়া এই দামী ফোনগুলো সে বেচত হয় ওএলএক্স-এর মতো পুরনো জিনিস কেনাবেচার সাইটে, কিংবা পশ্চিম দিল্লিতে পাইরেটেড জিনিসপত্রের জন্য কুখ্যাত গফফুর মার্কেটে।
দিল্লি পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তা মিলিন্দ মহাদেও ডাম্বেরে জানিয়েছেন, ১৬৬টা ফোনের সবকটার জন্যই শিবম চোপড়া ঠিক একই কৌশল ব্যবহার কেরছিল - আর এভাবেই হাতিয়ে নিয়েছিল ৫০ লক্ষ টাকারও বেশি।
গত তিন-চার মাস ধরে তদন্ত চালিয়ে, অভিযুক্ত ব্যক্তি কোথাও থাকতে পারে তার কাছাকাছি এলাকায় কার্যত চিরুনি তল্লাসি চালিয়ে দিল্লি পুলিশ অবশেষে শিবম চোপড়াকে এ সপ্তাহে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।
তাকে যে মোবাইল সিমকার্ড জোগান দিত, সেই দোকানদারকেও পুলিশ আটক করেছে।
ধরা পড়ার সময় শিবম চোপড়ার কাছ থেকে ১৯টি মোবাইল ফোন, ১২ লক্ষ টাকা নগদ ও চল্লিশটি ব্যাঙ্ক পাসবুক ও চেকবুকও মিলেছে। এক বন্ধুর কাছে সে আরও ১০ লক্ষ রুপি জমা রেখেছিল, সন্ধান মিলেছে সেই টাকারও।
এর আগে হায়দ্রাবাদেও পুলিশ দুজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে, যারা ভারতের বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটকে অভিনব কায়দায় প্রতারিত করত।
হায়দ্রাবাদের ঘটনায় ডেলিভারি বয় যখন পেমেন্টের জন্য দরজায় অপেক্ষা করত, তখন তারা বাক্সটি নিয়ে খুব কায়দা করে তার সিল খুলে ভেতরের জিনিসটি বের করে নিয়ে তাতে বালি ভরে দিত।
তারপর আবার বালিভরা বাক্সটি সিল করে ফেরত দিয়ে বলত, তারা জিনিসটি নিতে চায় না!
Source: http://www.bbc.com/bengali/news-41583445

No comments

Thanks for your valuable comment!