বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে রেখে সংবিধানের যে
ষোড়শ সংশোধনী হয়েছিল তা অবৈধ বলে রায় দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ
আদালত সুপ্রিম কোর্ট।
আজ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির
বেঞ্চ সরকারের আপিল খারিজ করে সর্বসম্মতিক্রমে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত
হাইকোর্টের পূর্বের রায় বহাল রাখেন।
সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণায় প্রধান বিচারপতি বলেন, পক্ষে বিপক্ষে ১১ দিন শুনানির পর
তারা সর্বসম্মতিক্রমে আপিলটি খারিজ করেছেন।
সংবিধানের সর্বশেষ সংশোধনীটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদনকারী পক্ষের
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের
ফলে বিচারপতি অভিশংসনে ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিলুপ্ত করা সুপ্রিম জুডিশিয়াল
কাউন্সিলকেই পুনর্বহাল রাখতে হবে।
ষোড়শ সংশোধনীর আগে বিচারপতি অপসারণে বাংলাদেশের সংবিধানে সুপ্রিম জুডিশিয়াল
কাউন্সিল গঠনের বিধান ছিল। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই বিধান বিলুপ্ত করে
সংবিধান সংশোধন করা হয়। আজ ওই সংশোধনীকেই অবৈধ ঘোষণা করলেন দেশের
সর্বোচ্চ আদালত।
বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের সংবিধানে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে
দেওয়া হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের জানুয়ারি মাসে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীতে এই
ক্ষমতা সংসদের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে প্রেসিডেন্টকে দেওয়া হয়েছিল। পরে প্রধান
বিচারপতির নেতৃত্বে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের বিধান করা হয়।
ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নয় জন আইনজীবীর রিট আবেদনের পর গত
বছর মে মাসে সংশোধনীটিকে অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এই রায়ের বিরুদ্ধে এ
বছর ৪ জানুয়ারি সরকারের পক্ষ থেকে আপিল করা হয়।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির বেঞ্চ গত ১ জুন এই
রিটের শুনানি শেষ করে যে কোন সময় রায় দেওয়া হবে বলে জানান। এ বিষয়ে
ড কামাল হোসেন ও মনজিল মোরসেদসহ নয়জন এমিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু)
সংবিধানের সংশোধনীটির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের সামনে তাদের যুক্তি তুলে ধরে।
অন্যদিকে অ্যামিকাস কিউরি আজমল হোসেন কিউসি, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে
আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা সংবিধান সংশোধনের পক্ষে যুক্তি দেন।
Post a Comment